মৌখিক পরীক্ষা (Defense Guide)

১.মৌখিক পরীক্ষা: মৌখিক পরীক্ষার স্বরূপ : মৌখিক পরীক্ষা  হলো কর্মক্ষেত্রে উপযুক্ত লোক বাছাইয়ের একটি সর্বসম্মত পদ্ধতি। কর্মক্ষেত্রে উপযুক্ত ...

পরীক্ষার্থীর গুণাবলী:

পরীক্ষার্থীর গুণাবলী: 
মৌখিক পরীক্ষায় শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কোন বিষয়ের ওপর পরীক্ষার্থীর জ্ঞানের পরিমাপ করা হয় না বরং পরীক্ষার্থী সম্বন্ধে আরো ব্যাপক তথ্য সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের সাথে মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্যগুলো একত্রিত করে প্রার্থীর যোগ্যতার একটি তালিকা তৈরি করা হয়ে থাকে। লিখিত পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী পরীক্ষকের সামনে থাকে না বলে লিখিত পরীক্ষার ফল থেকে তার সম্মন্ধে বিষয়বস্তুর জ্ঞান ছাড়া অন্য কোন তথ্য জানা সম্ভব হয় না। এ কারণে পরীক্ষার্থী সম্মন্ধে ব্যাপক তথ্য জানা ও দেখার উদ্দেশ্যে মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়ে থাকে। এ কারণে একজন প্রার্থীর জন্য মৌখিক পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ পরীক্ষার মাধ্যমেই যেহেতু সে নিজেকে প্রকাশ করার সুযোগ বেশি পরিমাণ পায়, তাই এক্ষেত্রে তার গুণাবলী উপস্থাপনের জন্য তাকে তৎপর থাকতে হয়। যদিও বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন গুণাবলীর প্রয়োজন হয়, তবুও সাধারণত কতগুলো গুণ প্রায় সব চাকুরীর জন্যই প্রয়োজন হয়। এসব গুণাবলীর মধ্যে অন্যতম গুণাবলী হলো:
১.    শারীরিক গঠন: মৌখিক পরীক্ষার সময় পরীক্ষকগণ একজন প্রার্থীকে সরাসরি দেখার সুযোগ পান বলে তাঁরা প্রার্থীর শারীরিক গঠন ও দৈহিক সুস্থতা যাচাই করে থাকে।
একারণে একজন পরীক্ষার্থীর যথাযথ শারীরিক গঠন ও দৈহিক সুস্থতা একান্ত আবশ্যক।
২.আচার ব্যবহার : মৌখিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর উত্তরদান ও কথোপকথনের মাধ্যমে তার সাধারণ ব্যবহার পরিমাপ করা হয়। তাই অনেক সময় পরীক্ষার্থীর সৌজন্যমূলক বা অসৌজন্যমূলক ব্যবহার তার সাফল্য বা বিফলতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সে কারণে সংযত, শালীন, বিনয় আচার-ব্যবহার পরিমাপ করা হয়।
৩.বুদ্ধি : মৌখিক পরীক্ষায় সাফল্য অর্জনের জন্য বুদ্ধির পরিমাণ একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সাধারণত একজন প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতাই তার বুদ্ধির প্রকাশ। তবে কথোপকথনের মাধ্যমে প্রার্থীর আচার-ব্যবহার, প্রতিযোজনের ক্ষমতা প্রবৃতি সম্মন্ধে অনেক কিছু জানতে পারা যায়। কোন বিশেষ প্রশ্নের উত্তরে প্রার্থী কিভাবে যুক্তি প্রদর্শন করে বা কি সিদ্ধান্তে উপনীত হয় তা থেকে তার বুদ্ধির পরিচয় পাওয়া যায়। তার যুক্তিগুলো কতটা পরিপক্ক জ্ঞানের বিকাশ পরীক্ষক তা যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করে প্রার্থীর বুদ্ধির পরিমাণ স্থির করতে পারেন।
৪.সামাজিক প্রতিযোজনের ক্ষমতা: পরীক্ষকগণ পরীক্ষার্থী কর্তৃক উপস্থাপিত যাবতীয় তথ্যাবলী থেকে তার সামাজিক প্রতিযোজনের ক্ষমতা , সহযোগিতা সম্পর্কে ধারণা করতে চেষ্টা করেন। পরীক্ষকগণ দেখতে চান পরীক্ষার্থী স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কোন গ্রুপ বা দলে স্থান বেছে নিয়ে নিজের সত্তাকে প্রদর্শন করতে পেরেছে কিনা। সে কখনও কোন রকম নেতৃত্ব দিতে পেরেছে কিনা, কোন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে কিনা। বয়স্কাউট বা রোভার স্কাউট ছিল কিনা বা অন্যান্য ছাত্রদের সাথে মিশতে বা আলাপচারিতা জমাতে পছন্দ করে কিনা ইত্যাদি। এসব কিছু পর্যবেক্ষণ করে একজন প্রার্থীর সামাজিক প্রতিযোজনের ক্ষমতা যাচাই করা হয়ে থাকে।
৫. নিজের প্রতি মনোভাব : প্রার্থী নিজের প্রতি কিরূপ মনোভাব পোষণ করে পরীক্ষকগণ তা পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। গভীর বিবেচনার সাথে পরীক্ষকগণ পরীক্ষার্থীর নিজের প্রতি ধারণা বাস্তবের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা যাচাই করে থাকে।
এক্ষেত্রে অনেক সময় পরীক্ষকগণ পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ জীবনের লক্ষ্য সম্মন্ধে জানতে চান। পরীক্ষার্থী যে চাকুরীর জন্য পরীক্ষা দিচ্ছে তাতে তার প্রকৃত আগ্রহ আছে কিনা তা জানতে চান। তার কি পছন্দ, কি অপছন্দ তা জানতে চান। তার কোন প্রিয় ব্যক্তিত্ব আছে কিনা, কোন বিশেষ মতবাদে সে বিশ্বাসী কিনা ইত্যাদি সম্পর্কেও পরীক্ষকগণ জানতে চান। আর এসবের মাধ্যমে পরীক্ষকগণ প্রার্থীর মনোভাব যাচাই করে থাকেন।
৬. কর্তৃপক্ষের প্রতি মনোভাব: অনেক পদে নিয়োগের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি প্রার্থীর মনোভাব যাচাই করা হয়ে থাকে। প্রার্থীর বাড়ির অবস্থা কেমন, পিতামাতার সাথে তার কেমন সম্পর্ক, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় পরিজনের সাথে তার কোন নিবিড়তা, তার পরিবারে কোন অশান্তি আছে কিনা, সে কোন মনোকষ্টে ভোগে কিনা, জীবনে তাকে অমানবিক কষ্ট সইতে হয়েছে কিনা ইত্যাদি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তার বর্তমান সম্পর্কে আরো বেশি তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে। এবং এসবের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের প্রতি তার মনোভাব পরীক্ষা করা যায়।
৭.আবেগের স্থিরতা : একজন প্রার্থীর আবেগের স্থিরতা নির্ণয়ের জন্য প্রার্থী অতীতে কিভাবে প্রতিকূল অবস্থা সত্ত্বেও সাফল্য লাভ করতে সক্ষম হয়েছে তা যাচাই করা হয়ে থাকে। প্রার্থীর পরীক্ষায় কৃতকার্যতা বা অকৃতকার্যতা অর্থনৈতিক সচ্ছলতা বা অস্চছলতা, পারিবারিক সমস্যা প্রভৃতি অবস্থায় প্রার্থী কি ব্যবহার করেছে তা আবেগের স্থিরতা নির্দেশক।
৮. অধ্যবসায় : পরীক্ষার্থী তার নিজের বিশ্বাস ও নীতি বা মতবাদকে বাস্তবায়নের জন্য প্রতিকূলতা সত্ত্বেও কর্তব্য কর্ম করে যেতে সক্ষম কিনা, সে অধ্যবসায়ী কিনা তা প্রার্থীর অভিজ্ঞতা থেকে ধারণা করতে পরীক্ষকগণ চেষ্টা করেন।
৯.প্রেরণা : ভাল কাজের উত্তম ফললাভ করার পর পরীক্ষার্থী অনুপ্রাণিত হন কিনা, কিংবা নিজ উদ্যোগ বা কাজের প্রশংসা পেয়ে তার মধ্যে স্পন্দন জাগে কিনা বা কোন ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি নতুন উদ্যমে কাজ করেন কিনা ইত্যাদি পরীক্ষকগণ যাচাই করে থাকেন।
১০.চিন্তাধারার সুস্থতা : নিজের প্রতি, পরিবার ও সমাজের প্রতি, দেশ ও দশের প্রতি স্রষ্টা ও সৃষ্টির প্রতি তার কি চিন্তা চেতনা এবং জীবন ও জগত সম্পর্কে তার কি মনোভাব এবং এসব চিন্তা চেতনায় সুস্থতা বজায় আছে কিনা তা পরীক্ষকগণ গুরুত্ব সহকারে যাচাই করে থাকেন।
১১. প্রকাশ ভঙ্গি : নিজেকে , নিজের মনন, মেধা-প্রতিভা ও বুদ্ধিমত্তাকে প্রার্থী কতটা পারঙ্গমতার সাথে উপস্থাপন করতে পারে তা পরীক্ষকগণ বিচার করে থাকে।
১২.দায়িত্ববোধ: নিজের ওপর অর্পিত যাবতীয় দায়িত্ব পালনে প্রার্থী কতটুকু আন্তরিক বিভিন্ন উপায়ে পরীক্ষকগণ তা যাচাই করে থাকেন।
১৩.আত্মবিশ্বাস : জীবন যুদ্ধে প্রার্থী কতটুকু সফল বা আস্থাশীল কিংবা নিজের আকাঙ্খাকে বাস্তবায়নে প্রার্থী কতটুকু আত্মবিশ্বাসী তা পরীক্ষকগণ যাচাই করে থাকে।
১৪.প্রফুল্লতা : প্রার্থীর যাবতীয় কর্মে সজীবতা, স্বচ্ছতা বা আনন্দিত প্রফুল্লতা আছে কিনা পরীক্ষকগণ তাও যাচাই করে থাকেন।
১৫.সংযম : কোন বিপদ-আপদে বা দায়িত্ব ও কর্তব্য, পালনের ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থী সংযমের পরিচয় দেন কিনা পরীক্ষকগণ তাও লক্ষ্য করে থাকেন।
১৬.সাহস: কর্তব্য পালনে, কোন উদ্যোগ নিতে কিংবা কোন কর্মসূচী বাস্তবায়নে পরীক্ষার্থী সাহস ও দৃঢতা পোষণ করেন কিনা পরীক্ষকগণ তা যাচাই করে থাকেন।
১৭.প্রশাসনিক ক্ষমতা : প্রার্থীর প্রশাসনিক ক্ষমতা কেমন তা যাচাই করার জন্য পরীক্ষগণ পরীক্ষার্থীর জীবনের কর্মধারা বিশ্লেষণ করে থাকেন।

http://joinbddefense.blogspot.com/search/label/%E0%A6%AE%E0%A7%8C%E0%A6%96%E0%A6%BF%E0%A6%95%20%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE

১৮. নেতৃত্বদানের ক্ষমতা : ভবিষ্যতের কর্মপন্থা নির্ধারণ করা, কোন কাজ শুরু করার উদ্যম গ্রহণ করা, নিম্ন পদস্থ কর্মচারীর ও কর্মকর্তাদের কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে বন্টন করে সমঝোতা সৃষ্টি করা, সাধারনভাবে নেতৃত্ব দেয়া, কোন কাজ ঠিকভাবে তদারক করা ইত্যাদির মাধ্যমে একজন প্রার্থীর নেতৃত্বদানের ক্ষমতা যাচাই করা হয়ে থাকে।






"Md Hridoy Hossain"
Join BD Defense - Know Thyself
Be a Fearless Hero
http://joinbddefense.blogspot.com/


Related Posts
Previous
« Prev Post